খোলা চিঠি
---------------
তোমার ছাপোষা ভালোবাসায়
সহানুভূতির মোহর লাগিয়ে আমার
বুকের বা পাশের ব্যাথাটা আর
বাড়িওনা ৷ অনেক দিন হলো বুকের
ব্যাথাটা খুব যন্ত্রনা করছে ৷ আজকাল
আর চাইলেই চিঠি লিখতে বসে পড়তে
পারিনা হুটহাট করে ৷ এখন তো আর খুব
ভালো দেখতে পাইনা! তাই ৷ সেদিন
ভুল ওষুধ খেয়ে ফেলে কয়েকদিন ভুগতে
হলো ৷ অবশ্য বয়সতো আর কম হলোনা ৷
চশমাটা বদলে ফেলবো ভাবছি ৷ কিন্তু
অল্প বিস্তর অর্থসঙ্কটের জন্য করা
হচ্ছে না ৷ তোমার দেয়া আংটিটা
বিক্রি করে দিয়েছিলাম বেশ
কয়েকমাস আগে, যেটা তুমি আমায়
বিয়ের পর প্রথম দিন দিয়েছিলে ৷ এখন
তোমার স্মৃতি বলতে ওই মাফলার
খানাই ৷ তবে তুমি ভেবোনা, আমি মন
খারাপ করিনি ৷ সোনার
আংটিখানাতে কি আছে! তুমিতো
পাশেই আছো ৷ জানো, আজকাল চিঠি
পড়তে বসলেও অক্ষরগুলো কেমন যেন
গুলিয়ে যায় ৷ কেন যেন মনে হয়
প্রতিটি চিঠিই চোঁখের জলে নোনতা
করে পাঠিয়েছ, তাই অক্ষর গুলো এমন
ঘোলাটে ৷ আসলেই কি চোঁখের ভুল?
নাকি................
যাই হোক, টুকুনের ফিরে আসার কথা
শুনে খুব উচ্ছ্বসিত হলাম ৷ ও কি এখনও
তোমার হাত ধরে পার্কে বেড়াতে
যায়? নাকি তোমার হাতের ছোটো
আঙুলটা এখন আর পথ চলতে প্রয়োজন হয়
না?
হবেই বা কি করে বলো ? এখনতো ও
অনেক বড় হয়েছে ৷ যে নিজেই
বিলাসবহুল গাড়ীতে চড়ে ঘুরে বেড়ায়
সে কি আর কুঁচকে যাওয়া চামড়ায়
হাত রেখে ভরসা পাবে? যাক, তোমার
পায়ের ব্যাথাটা কমেছে তো! কে
মালিশ করে দেয়? রোজ রাতেই কি
ব্যাথা হয়? আমি তো কখনোই ব্যাথাটা
বাড়তে দিতে চাইতাম না ৷ কিন্তু তুমি
নিশ্চয়ই তোমার পুরোনো
খামখেয়ালির অভ্যাস বশত এখনও কষ্ট
পাচ্ছো ৷ ওরকম করোনা ৷ ঘুমিয়ে পড়ার
পর গায়ে চাদরটা কে টেনে দেয়?
টুকুন? নিয়মিত ওষুধ গুলো তিনবেলা
দেয় তো? প্রেশার টা কমেছে তো?
এখনও তেলাপিয়ার মাথা খাও? নাকি
জড়তা হয় নিজেকে বোঝা ভেবে?
ওরকম কিছু ভেবোনা ৷ টুকুন তোমায়
বড্ড ভালোবাসে ৷ নিজের একটু যত্ন
নিও ৷ এত চাপা স্বভাবের হলে কি
করে হয় বলো?
এখানে আমি ভালোই আছি বলতে
পারো ৷ এখানকার সবাই বেশ ভালো
আর আন্তরিক ৷ খুব যত্ন করে বুয়াটা ৷
মাঝে মধ্যে একটু বিরক্ত হয় ৷ তা আমি
কিছু মনে নিই না ৷ শুধু মাঝেমাঝে
পাশের রুমের ভদ্রমহিলা একটু বাজে
বকে ৷ তবে তাতেও আমি কিছু মনে
করিনা ৷ আমিতো জানিই, ওরকম বয়স
হলে সবাই-ই একটু আধটু বকে ৷ কি বলে
শুনবে? হা হা ৷ বলে তুমি নাকি আর এ
পৃথিবীতে নেই ৷ আমি অযথাই কষ্ট করে
ভাঙা চশমায় চিঠি লিখে সময় নষ্ট
করি ৷ তোমাকে নাকি সাত বছর আগেই
পারিবারিক কবরস্থানে শুইয়ে দিয়ে
আসা হয়েছে ৷ আমি নাকি শেষ বয়সে
বিভ্রান্তি নিয়ে বেঁচে আছি ৷ হা হা!
কি পাগল বলোতো! তুমি না থাকলে
প্রতি জোছনায় কিভাবে ঘুরে বেড়াই
তোমার হাত ধরে? আমি কি ভুল
দেখতে পারি? যত যাই হোক, তোমার
গায়ের গন্ধটাতো আর ভুল হতে পারে
না ৷ কি যে বলবো! ওনার আসলেই
প্রলাপ বকার রোগটা ধরে গেছে ৷
বৃদ্ধাশ্রমে আসলে যে অবস্থা হয় আর
কি অনেকের!
যাই হোক! ভালো থেকো ৷ আর অত
দেরি করে করে চিঠি দিও না ৷ একটু
জলদি দিও ৷ তোমার মাফলার টা
যত্নে তুলে রেখেছি ৷ আবার যখন
শীতের সন্ধ্যায় আসবে এটা জড়িয়েই
ব্যালকনি তে ঘুরে বেড়াবো ৷ কেমন!!
---------------
তোমার ছাপোষা ভালোবাসায়
সহানুভূতির মোহর লাগিয়ে আমার
বুকের বা পাশের ব্যাথাটা আর
বাড়িওনা ৷ অনেক দিন হলো বুকের
ব্যাথাটা খুব যন্ত্রনা করছে ৷ আজকাল
আর চাইলেই চিঠি লিখতে বসে পড়তে
পারিনা হুটহাট করে ৷ এখন তো আর খুব
ভালো দেখতে পাইনা! তাই ৷ সেদিন
ভুল ওষুধ খেয়ে ফেলে কয়েকদিন ভুগতে
হলো ৷ অবশ্য বয়সতো আর কম হলোনা ৷
চশমাটা বদলে ফেলবো ভাবছি ৷ কিন্তু
অল্প বিস্তর অর্থসঙ্কটের জন্য করা
হচ্ছে না ৷ তোমার দেয়া আংটিটা
বিক্রি করে দিয়েছিলাম বেশ
কয়েকমাস আগে, যেটা তুমি আমায়
বিয়ের পর প্রথম দিন দিয়েছিলে ৷ এখন
তোমার স্মৃতি বলতে ওই মাফলার
খানাই ৷ তবে তুমি ভেবোনা, আমি মন
খারাপ করিনি ৷ সোনার
আংটিখানাতে কি আছে! তুমিতো
পাশেই আছো ৷ জানো, আজকাল চিঠি
পড়তে বসলেও অক্ষরগুলো কেমন যেন
গুলিয়ে যায় ৷ কেন যেন মনে হয়
প্রতিটি চিঠিই চোঁখের জলে নোনতা
করে পাঠিয়েছ, তাই অক্ষর গুলো এমন
ঘোলাটে ৷ আসলেই কি চোঁখের ভুল?
নাকি................
যাই হোক, টুকুনের ফিরে আসার কথা
শুনে খুব উচ্ছ্বসিত হলাম ৷ ও কি এখনও
তোমার হাত ধরে পার্কে বেড়াতে
যায়? নাকি তোমার হাতের ছোটো
আঙুলটা এখন আর পথ চলতে প্রয়োজন হয়
না?
হবেই বা কি করে বলো ? এখনতো ও
অনেক বড় হয়েছে ৷ যে নিজেই
বিলাসবহুল গাড়ীতে চড়ে ঘুরে বেড়ায়
সে কি আর কুঁচকে যাওয়া চামড়ায়
হাত রেখে ভরসা পাবে? যাক, তোমার
পায়ের ব্যাথাটা কমেছে তো! কে
মালিশ করে দেয়? রোজ রাতেই কি
ব্যাথা হয়? আমি তো কখনোই ব্যাথাটা
বাড়তে দিতে চাইতাম না ৷ কিন্তু তুমি
নিশ্চয়ই তোমার পুরোনো
খামখেয়ালির অভ্যাস বশত এখনও কষ্ট
পাচ্ছো ৷ ওরকম করোনা ৷ ঘুমিয়ে পড়ার
পর গায়ে চাদরটা কে টেনে দেয়?
টুকুন? নিয়মিত ওষুধ গুলো তিনবেলা
দেয় তো? প্রেশার টা কমেছে তো?
এখনও তেলাপিয়ার মাথা খাও? নাকি
জড়তা হয় নিজেকে বোঝা ভেবে?
ওরকম কিছু ভেবোনা ৷ টুকুন তোমায়
বড্ড ভালোবাসে ৷ নিজের একটু যত্ন
নিও ৷ এত চাপা স্বভাবের হলে কি
করে হয় বলো?
এখানে আমি ভালোই আছি বলতে
পারো ৷ এখানকার সবাই বেশ ভালো
আর আন্তরিক ৷ খুব যত্ন করে বুয়াটা ৷
মাঝে মধ্যে একটু বিরক্ত হয় ৷ তা আমি
কিছু মনে নিই না ৷ শুধু মাঝেমাঝে
পাশের রুমের ভদ্রমহিলা একটু বাজে
বকে ৷ তবে তাতেও আমি কিছু মনে
করিনা ৷ আমিতো জানিই, ওরকম বয়স
হলে সবাই-ই একটু আধটু বকে ৷ কি বলে
শুনবে? হা হা ৷ বলে তুমি নাকি আর এ
পৃথিবীতে নেই ৷ আমি অযথাই কষ্ট করে
ভাঙা চশমায় চিঠি লিখে সময় নষ্ট
করি ৷ তোমাকে নাকি সাত বছর আগেই
পারিবারিক কবরস্থানে শুইয়ে দিয়ে
আসা হয়েছে ৷ আমি নাকি শেষ বয়সে
বিভ্রান্তি নিয়ে বেঁচে আছি ৷ হা হা!
কি পাগল বলোতো! তুমি না থাকলে
প্রতি জোছনায় কিভাবে ঘুরে বেড়াই
তোমার হাত ধরে? আমি কি ভুল
দেখতে পারি? যত যাই হোক, তোমার
গায়ের গন্ধটাতো আর ভুল হতে পারে
না ৷ কি যে বলবো! ওনার আসলেই
প্রলাপ বকার রোগটা ধরে গেছে ৷
বৃদ্ধাশ্রমে আসলে যে অবস্থা হয় আর
কি অনেকের!
যাই হোক! ভালো থেকো ৷ আর অত
দেরি করে করে চিঠি দিও না ৷ একটু
জলদি দিও ৷ তোমার মাফলার টা
যত্নে তুলে রেখেছি ৷ আবার যখন
শীতের সন্ধ্যায় আসবে এটা জড়িয়েই
ব্যালকনি তে ঘুরে বেড়াবো ৷ কেমন!!
No comments:
Post a Comment