Tuesday, December 27, 2016

স্ত্রীকে ভালোবাসুন

স্ত্রীকে ভালোবাসুন
*******************
--------------
যে মেয়েটা গরম তেলে হাতে পায়ে ফোস্কা
ফেলে টেবিল ভরে খাবার সাজিয়ে রাখে l সে
মেয়েটাকে এক গাল ভাত খাইয়ে দেওয়াটা কি খুব বাড়াবাড়ি ?
"
যে মেয়েটা এটো বাসন থালাবাটি গুছিয়ে
দিন
শেষে
আপনার জন্য অপেক্ষা করে l তার জন্য এক বাটি আইসক্রিম অথবা মুঠো ভরে কিছু
চকলেট নিয়ে আসাটা কি খুব বাড়াবাড়ি ?
"
যে মেয়েটা আপনার আশায় ঘরের সেবায়
সংসার সাজিয়ে সারাটা জীবন কাটিয়ে দেয়
l কোনো
এক অজানা কারণে অভিমানে যদি
ওপাশ ফিরে ঘুমায় -তার পিঠের আচল সরিয়ে
ছোট্ট একটা চুমু খাওয়াটা কি খুববাড়াবাড়ি ?
"
শুধু স্বপ্ন দিয়ে জীবন চলেনা আবার স্বপ্ন ছাড়াও জীবন চলেনা l ভিডিও গেমসের মত
দ্বিতীয়
লাইফ নিয়ে কেউ পৃথিবীতে আসেনা.
জীবন একটাই সে ! জীবন ঢেলে সাজাতে
হয়......
" ভালবাসুন স্ত্রীকে.........
" স্ত্রী কে ভালবাসুন -যখন সে আপনার চায়ে
ছোট একটি চুমুক দেয়। কারণ, সে নিশ্চিত হতে
চায় চা টি আপনার পছন্দ মত হয়েছে কিনা।
"
স্ত্রী কে ভালবাসুন -যখন সে তৈরি হতে দীর্ঘ সময় পার করে দেয়। কারণ সে চায়
তাকে আপনার চোখে সবচেয়ে সুন্দর লাগুক।
" স্ত্রী কে ভালবাসুন -যখন তাকে সুন্দর
দেখায়। কারণ সে আপনারই, তাই প্রশংসা
করুন।
" স্ত্রী কে ভালবাসুন -যখন সে আপানাকে নিয়ে
ঈর্ষান্বিত হয়। কারণ, সে অন্য সমস্ত
মানুষকে
রেখে শুধুমাত্র আপনাকেই বেঁছে
নিয়েছে......

Tuesday, December 06, 2016

পীর সাহেব ২য় পর্ব

পীর সাহেব
২য় পর্ব
===================
*
লতিফ মুখে হুজুরের কাছে বিয়ের কথা
বলার আগেই সে প্রচার শুরু করে দেয় ।
আমার আদরের জামাইয়ের মনমরা মুখ
সহ্য করতে পারছি না। তাই ঠিক
করেছি আবার তার বিয়ে দেব।পাত্রী
পছন্দ করেই ফেলেছি । আগামী মাসে
বিয়ে।
লতিফ কি বলবে ভেবে পায় না। সত্যি
তার শ্বশুর পীর বটে ! নইলে তার মনের
কথা এভাবে বুঝতো না। লতিফের
ভক্তি-শ্রদ্ধা শত গুণ বেড়ে যায়।।শ্বশুর
ছাড়া কিছু বোঝে না।
এবারও বিয়েতে ধুমধামের কমতি হলো
না। বৌ দেখে লতিফের প্রান জুড়িয়ে
যায়। তার শ্বশুরের পছন্দ আছে বলতেই
হয়।
নারায়নগঞ্জে পাটের কারবার
লতিফের। সেখানেই উঠলো বউ নিয়ে।
শ্বশুর- শ্বাশুড়ী ভেজা চোখে বিদায়
দিলো তাদের।
~
দিনে দিনে দুই বছর গেল , তিন বছর
গেলো। এর মধ্যে কোন সন্তান পেটে
এলো না সকিনার ।তার টলটলে
স্বাস্থ্য, উপযুক্ত বয়স । এ বয়সে সন্তান
না হওয়ার তো কোন কারন নেই।
ডাক্তার দেখানোর জন্য সকিনা
পীড়াপীড়ি করলে আজ কাল করে
সময়ের অজুহাত দিয়ে এড়িয়ে যায়
লতিফ মিয়া। তার ভয় , ডাক্তার যদি
তাকেই এই অবস্থার জন্য দায়ী করেন ।
তখন কি তার কাছে থাকবে সকিনা?
সকিনার কান্নাকাটিতে অতিষ্ট হয়ে
ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে রাজী
হয় । ডাক্তার বিভিন্ন পরীক্ষা -
নীরিক্ষা করে যা বললেন তাতে
মাথায় আকাশ ভেঙে পরলেও এতো
কষ্ট পেত না সকিনা। কিন্তু এখন তো
কিছু করারও নেই।
ডাক্তারের কথা হেসে উড়িয়ে দেয়
লতিফ মিয়া।
তোমারও কি তা-ই মনে হয়? আমার তা
মনে হয় না। কে কাটবে তোমার
নাড়ী ? কেন কাটবে? মাথা কি
খারাপ হইছে কারো?
~
মাঘী পূর্ণিমার দিন ঘনিয়ে এসেছে।
সবাই একে একে আস্তানায় আসতে শুরু
করেছে।
সকিনাকে নিয়ে দুদিন আগে আসে
লতিফ।
ছেলেমেয়েরা বাপকে পেয়ে আনন্দে
লাফিয়ে এসে জড়িয়ে ধরে।মায়ের
কাছে তারা আসে না। সকিনার
ভেতরটা পুড়ে যায় ,মুখে কিছু বলতে
পারে না। পীর প্রভাবিত মহলে মনের
কথা বলা পাপ।
শিরনি-সালাত সেরে যার যার মতো
চলে যায়। লতিফ আরো দুদিন থাকতো।
কিন্তু খবর আসে পাটের গুদমে আগুন
লেগেছে। তাই তাকে তড়িঘড়ি করে
চলে যেতে হলো।
ধনী এক তামাক ব্যবসায়ি ,পীর
সাহেবের অনেক হাতে পায়ে ধরে তার
মেয়ের বিয়েতে পীরমাকে নিয়ে
গেলেন । বাধ্য হয়ে সকিনাকে থাকতে
হলো বাড়িতে।
সকিনা অনেক ভেবেও তার
প্রশ্নগুলোর উত্তর খুজে পায় না। মনটা
পুড়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। কেন তাকে
ওই শাস্তি দেওয়া হলো? কেন তাকে
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চাওয়া থেকে বঞ্চিত
করা হলো? সাপের মতো ফুসতে থাকে
সে। যদি বিষধর সাপ কাউকে কাটে ওই
সাপকে মেরে ফেলা কি অন্যায়?এই
প্রশ্নে ক্ষতবিক্ষত সকিনার মন।
~
মাঘের কুয়াশায় জড়ানো জমাট বাধা
অন্ধকার রাত। চারদিক নিস্তব্ধ । রাত
বারোটায় হুজুর আসন ঘর থেকে অন্দর
মহলে আসেন । লেবাস পোশাক ছেড়ে
শুতে যাবে এমন সময় সকিনা এসে
দরজায় দাড়ালো।
-বাবা, বাবা কি শুয়ে পড়েছেন?
-না মা ,কেন?
ভেতরে আসবো । আপনার সঙ্গে একটা
কথা ছিলো।
-এসো, ভিতরে এসো।
সকিনা ঘরে আসতেই পীর সাহেব
বিছানায় শুয়ে বললেন, বলো, কি কথা?
-বাবা , আপনি এতো লোকের জন্য
দোয়া করেন , আামার জন্য দোয়া
করেন না? আজ এসেছি দোয়া ভিক্ষা
চাইতে।
-কেন, কিসের অভাব তোমার? কিসের
জন্য দোয়া?
- আমার কোল জুড়ে কেউ আসছে না
কেন?
-আসবে, আসবে, খাস দিলে দোয়া
করছি।
-তাই? দোয়া করছেন? বাবা, আমার
পেটে একটা কাটা দাগ আছে । তা
কিসের?
-তোমার খুব কঠিন অসুখ হয়েছিল।
পেটে টিউমার ছিল। তা ফেলে দেয়া
হয়েছে। না হলে তুমি সারা জীবন খুব
অসুবিধায় থাকতে।এ কথা বলে পীর
সাহেব মুখ ঘুড়িয়ে রাখলেন।
-আমি অসুবাধায় থাকতাম না আপনি
অসুবিধায় থাকতেন?
আমার পেটের সন্তান আপনার সম্পদের
ভাগিদার হতো । তাই তাদের দুনিয়ায়
আসা চিরতরে বন্ধ করতে লাইগেশন
করিয়ে দিয়েছেন। ঠিক বলিনি?
-তুমি কি নিজেরে পীর মনে করো?
পরের মনের কথা বলতে চাও? এবার
পীরের কন্ঠে উত্তাপের ঝাঁঝ।
- পীরই শুধু মনের কথা বুঝে আর কেউ
বোঝে না। এই ধারনা মনে পুষে পীর
হয়েছেন। নারীরে অবলা ভাবেন, নারী
অবলা না । তারা মায়াবতী , মমতাময়ী
তাই দুর্বল আর অবলা ভাবেন। না ,
নারী বাঘিনীও । আর এই বাঘিনীদের
থাবা খুব ভয়ঙ্কর। আইজ দেখবেন
নারীর বাঘীনী রূপ। মানুষকে মানুষ
ভাবেন না। ভালোই করেছেন। জবাব
দিবেন রোজ কেয়ামতে এর আগে আজ
নেন আপনের পূণ্যের পুরস্কার।
~
সকিনার মুখ হঠাৎ কঠিন হয়ে গেল। তার
চোখে প্রতিশোধের আগুন জ্বলতে
থাকলো।
এই চেহারা আগে কখনও দেখেনি পীর
সাহেব।
আচমকা তার দেহ মনে অজানা এক
ভীতি ভর করলো। চোখে আগুন জ্বলা
রণমূর্তি রূপি এমন আওরাত সে
দেখেনি। পীর সাহেব অনুভব করলো
তার সারা শরীর যেন অবস হয়ে
যাচ্ছে।
~
এতক্ষন সকিনা কথা বলার সময় তার
ডান হাতটা কোমরের ওপরে শাড়ির
নিচে রেখেছিল ।
হঠাৎ সকিনা সকিনা শাড়ির নিচ
থেকে হাতটা বের করলো।
তার হাতে একটা রিভলবার !
সকিনা এগোতে থাকলো পীর
সাহেবের দিকে।
অবিশ্বাস্য !
সে কি গুলি করবে?
~
সাহায্যের জন্য পীর সাহেব চিৎকার
করতে চাইলো। কিন্তু না। তার গলা
ভয়ে শুকিয়ে গিয়েছে। একটা
আওয়াজও বের হলো না।
সকিনা বিছানার পাশে গিয়ে
দাঁড়ালো। একেবারে কাছ থেকে বাম
বুকের মাঝখানটা লক্ষ্য করে অকম্পিত
হাতে রিভলবারের ট্রিগার টিপলো
সে।
এরপর ধীর পায়ে ঘর থেকে বের হয়ে
নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয় সে।
ভাগ্যিস লতিফ তাড়াহুড়ার মধ্যে
রিভলবারটা নিতে ভুলে গিয়েছিল। না
হলে সাপ মারতাম কি দিয়ে?
অনুশোচনার পরিবর্তে আত্মতৃপ্তি
অনুভব করলো সকিনা। তার মনে আবার
সেই প্রশ্ন মাথাচাড়া দেয়, যে সাপ
কাটে তাকে মারলে কি পাপ হয়?
~
ভোর না হতেই বিদ্যুতের গতিতে
ছড়িয়ে পড়ে খবর: পীর-এ-কামেল চান
মাস্তানকে কে বা কারা খুন করেছে।
শোকের মধ্যে ভয়।
ভয়ের মধ্যে মৃদু গুন্জন।
কে করলো এই কাজ?
কে???
~ সমাপ্ত ~
**# মেয়েদের ভালোবাসা যেমনি মধুর
তাদের ঘৃনা তার চেয়েও ভয়ঙ্কর।
দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে নিজের
লড়াই নিজেকেই লড়তে হয়। আমাদের
সমাজেও এমন কিছু সাপ রয়েছে এ
সাপগুলো সমাজকে অভিশপ্ত করে
তুলেছে প্রতিনিয়ত। প্রয়োজন শুধু ঘুরে
দাঁড়াবার।
,
____ গোধূলী স্বপ

পীর সাহেব ( ১ম পর্ব )

পীর সাহেব
( ১ম পর্ব )
==================
*
পীর হওয়ার আগে পীর সাহেব যা ছিল
তা মুখে আনলেও ওযু নষ্ট হবে।
দুনিয়ার হেন কুকীর্তি নেই যা সে
করেনি। লুট, নারী অপহরন, অন্যের ঘরে
আগুন দেয়া ছিল তার কাছে ডাল ভাত।
হঠাৎ তার যেন কি হলো! বোল
পাল্টাতে শুরু করলো সে। সাগরেদরা
তো অবাক ! হলো কি ওস্তাদের?
~
-আর কতো? এবার বসে পড়বো। বুঝলি
অন্য পথে আয় করবো। বহুদিন এ লাইনে
ঘুরে দেখলাম ।এ দেশের মানুষ
ডাকাতকে যত ভয় পায় , এর চেয়ে
বেশি ভয় এবং শ্রদ্ধা করে পীরকে।
পীর হয়ে যাব।
-আমাদের কি হবে ওস্তাদ?আমরা খাব
কি করে?
-আমার সঙ্গে থাকবি । ভড়ং ধরবি।
রোজগার যা হয় আধাআধি পাবি।
আমার সঙ্গে মাজারে মাজারে ঘুরবি।
কায়দা-কানুন আয়ত্ব করতে না পারলে
কোন লাইনেই সুবিধা করা যায় না।
এইটা তো মানিস?
- তা তো ঠিকই সাগরেদরা সায় দিল।
~
শুরু হলো ট্রেনিং। জিকির থেকে শুরু
করে সব কিছু রপ্ত করতে মাস চারেক
লেগে গেল।
একদিন দলবল নিয়ে আস্তানা গাড়লো
ভিন গ্রামে। বিজন বনের মধ্যে ভাঙা
ইট দিয়ে অতি পুরোনো কবর বাধিয়ে
সেখানে বসে পড়লো।
গভীর রাতে জিকিরের শব্দে থমথমে
নিস্তব্দতা আরো ভারী হয়ে উঠলো।
গ্রামবাসী অবাক। যে বনের মধ্য দিয়ে
দিনের বেলায়ও মানুষ যাওয়ার সাহস
করে না, সেখানে মানুষের কন্ঠ!
তেলেসমাতি কারবার ! নিশ্চয় জিনরা
জিকির করছে। তারাওতো আল্লার
গুনগান করে।
সকালে অতি সাহসী কয়েকজন লাঠি-
সোঠা নিয়ে বনের মধ্যে ঢুকলো।তারা
আশ্চর্য হয়ে দেখলো ধূপ ধুনোর গন্ধ
মাখা ধোয়া ধোয়া পরিবেশে বসে
জিকির করছেন তার শিষ্যদের নিয়ে
একজন দরবেশ বাবা।
শিষ্যদের মধ্যে একজনের ইশারায়
আঙ্গুলের নির্দেশে তারা সবাই বসে
পড়লো।
~
শোনেন মিয়ারা, আমাদের হুজুর
স্বপ্নে দেখেছেন এখানে শুয়ে আছেন
ফকির শাহ বাবা। তিনি বলেছেন ,
ওরে নাদানের দল আর কত বেভুলে
রইবি?এখনো আমার কাছে দীক্ষা
নিলি না?আমার নামে শিরনি কর।যা
চাইবি তা ই পাবি।
মাঘ মাসের পূর্ণিমায় শিরনি হবে।
আপনারা আসবেন।আরো সবাইকে
বলবেন , তারাও যেন আসে।
~
কথাটা বিদ্যুতের মতো ছড়িয়ে পড়লো
আসে পাশের গ্রামে।দলে দলে লোক
হুমড়ি খেয়ে পড়লো।টাকায় টাকায়
ভরে গেল কবরের পাশে রাখা
দানবাক্স।বন আর বন রইলো না।
লোকালয় হয়ে উঠলো।
-এতো তাড়াতাড়ি সুখ্যাতি পাবেন
পীর সাহেবও ভাবেনি। মুচকি হেসে
বললো , দেখলিতো, আমার কথা কেমন
ফললো? আক্কেল থাকলে আউলিয়া
হতে কতক্ষণ ? বুঝলি আক্কেলই
আউলিয়া।
-হুজুর !ধন্য আপনার বুদ্ধি। ধন্য আপনার
আক্কেল।
সাগরেদরা এখন আার ওস্তাদ বলে না।
বলে হুজুর। হুজুর কথাটার মাহাত্মই
আলাদা। মনের গভীরে গিয়ে শ্রদ্ধা
উঠিয়ে আনে।
~
এখন এখানে পীর সাহেব যা বলে বা
করে তা ই শিরোধার্য । কারো কিছু
বলার নেই। এখন সে প্রতিষ্ঠিত পীর।
তার অতীত বর্তমান নিয়ে কোন প্রশ্ন
উঠে না।
-বদুরে ঘরের জন্য মন কান্দে তোর
মারে আর বইনেরে আনলে কেমন হয়?
হুজুর তার প্রধান শিষ্য বদুর কাছে মনের
কথা খুলে বলে।
ঘর - দোরের পাকা বন্দোবস্ত করে
নৌকা সাজিয়ে মহা ধুমধাম করে বদু
তাদের পীরমাকে নিয়ে আসে
পীরবোনসহ।
~
পীর মা আজিরন তো অবাক! এতোকাল
সংসার করেও লোকটাকে ঠিক চিনতে
পারলো না! লোকে বলতো, তার স্বামী
ডাকাত। মাঝে মধ্যে খোজ খবর
থাকতো না, বলতো জেলহাজত হয়েছে।
তওবা, তওবা! লোকে এতো মিথ্যা
বলতে পারে??
পীর সাহেবের দেহে চিকনাই,চোখে-
মুখে আতর- সুরমার নূরানী উজ্জ্বলতা,
দাড়ি বুক পর্যন্ত ঠেকেছে।সদা
পরিস্কার আর চিরনীর বদৌলতে তা
বাতাসে ফুরফুর করে ওড়ে।দাড়ি খুব
যত্নে রাখে সে। ওই দাড়িই তাকে
উঠিয়ে দিয়েছে শ্রদ্ধার উচ্চ স্থানে।
~
-পীর সাহেব একদিন বদুকে বললো ,
শোন , তোর বোন বড় হইছে। ভালো
পাত্র দেখ।আমার নয়নের পুত্তলিরে
দূরে পাঠাবো না , ঘর জামাই করে
রাখবো।সব সময় আমার চোখের সামনে
থাকবে। তারা দুটিতে নেলা খেলা
করবে । আমি প্রান জুড়িয়ে দেখবো ।
ব্যবস্থা কর।
হুজুর দ্রুত তসবিহ টিপে চলে।
~
মেয়ের জন্য পাত্রি পেতে দেরি হলো
না। ভেতরে ভেতরে বহু জমাজমা করা
হয়েছে। আর চোখের সামনে যা আছে
তা রাজার সম্পদকেও হার মানায়।
মোটামুটি চলনসই গৃরস্থ পরিবারর
ছেলের জোগাড় হয়। ঠেলাঠেলির
সংসারে এ ছেলে বেশি দূর লেখাপড়া
করেনি।
ছেলের বন্ধুরা শুনে তো মহা খুশি।
- সত্যি দোস্ত তোর কপাল বটে।কোন
পূর্ণিমায় তোর জন্ম হয়েছে।
লতিফ লজ্জায় লাল হয়।সেও তার ভাগ্য
পরিবর্তনের সুযোগ করে দেয়ায়
আল্লাহর কাছে শুকুর গুজার করে।
~
চান পীরের মেয়ে জীবন। অপ্সরীর
মতো সুন্দরী না হলেও সুখের ছোয়া
এবং যৌবন তাকেও সুন্দরী করেছে।
পীরের মেয়ের বিয়ে। ঘুম নেই
মুরিদানদের।তারা কি রেখে কি
করলে হুজুরের মন পাওয়া যাবে এ
প্রতিযোগীতায় নেমে গেলো।আনন্দ
মেলা শেষে আখেরি মোনাজাতের
মতো মোনাযাত হলো। পীর সাহেব
নিজে অশ্রুসজল চোখে ভক্ত দের
কাছে দোয়া ভিক্ষা করলো।বললো
দোয়া করো যেন তাদের জীবন সুখে
শান্তিতে কাটে। বছর না ঘুরতে আমার
জীবনের কোল জুড়ে নাতি ভাই আসুক।
সবাই উচ্চস্বরে বললো ,আমিন! আমিন!
~
মুরিদানদের দোয়া আল্লাহপাক কবুল
করেছিলেন। সাত বছরে পাচ সন্তানের
জন্ম দিয়ে জীবন ঠিকই বাবার আশা
পূরণ করেছিল।
কিন্তু ঘন ঘন সন্তান জন্ম দিয়ে
মারাত্মক জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে
মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো। শোকের
মাতম নেমে এলো আস্তানা জুড়ে।
কারো মনে শান্তি নেই, সুখ নেই।
~
দিন যায়, মাস যায় । লতিফ আবার
বিয়ে করার জন্য উতলা হয়ে ওঠে।
-মাথায় বাজ পড়লো হুজুরের। বলে কি!
আমার এতো সাধ্য সাধনার সম্পদ । এর
ভাগিদার জোগাড় করতে চায় ঐ
ছোটলোকের পুত!
এসব ব্যাপারে রাগারাগিতে ভালো
ফল হয়না। ঠান্ডা মাথায় কাজ করতে
হবে।
বদুর সঙ্গে পরামর্শ হয় গোপনে।
-সুন্দরী দেখে একটা গরীব ঘরের মেয়ে
জোগাড় কর। এক শর্ত দিবি, পীর
সাহেবের ইচ্ছা , তার মেয়ে যেহেতু
অসুখে মারা গেলো রোগ ধরার আগেই,
সেহেতু সে চায় যে মেয়েরে নিজের
মেয়ে বানাবেন তার সারা শরীর
ডাক্তার দিয়া পরীক্ষা করিয়ে
নিবেন।
-বদুকে আরো কাছে টেনে মন্ত্র ঢেলে
দেয় তার কানে। ডাক্তার যা চায় তা-
ই দিয়ে নাড়ি কাটিয়ে আনবি ছেড়ির।
ডাক্তাররে বলবি যেন বলে , পেটে
টিউমার হয়েছে, না কাটলে মারা
পড়বে মেয়ে।
হুজুরের বহু দিনের সঙ্গী বদু। তার অনেক
বুদ্ধিতেই মুগ্ধ সে। আজকের বুদ্ধি শুনে
হতবাক! একটা মেয়ের এতো বড়
সর্বনাশ?
বদুর অন্য মনস্কভাব হুজুরের নজর এড়ায়
না।
-কি ভাবস বদু?পারবি না?
বদু যে চক্রে জড়িয়েছে এর কি না
পেরে উপায় আছে?
,
,,,,,,,,,,,অসমাপ্ত

বিষাদ কাব্য

বিষাদ কাব্য
====================
আমি কি তোমার জন্য মাড়াইনি
অনন্ত কন্টকবন?
ক্ষত-বিক্ষত করিনি দুইটি পা ?
নিদ্রাহীন কাটাইনি সহস্র রজনী?
ছিন্ন ভিন্ন করি নাই এই সত্তা আমি কি মোটেই?
নিজেকেই ফেলিনি কি
সাম্ভব্য বিপদের মুখে বারবার ?
দীর্ঘশ্বাস করি নাই আমার সতত সঙ্গী?
,
একমাত্র তুমিই জানো রাতজাগা মাঘ নিশীথের চাঁদ
অন্তরাত্মা দীর্ঘশ্বাসগুলি
বুকের পাঁজড় খুলে দেখ লেখা আছে
কত সজল বিষাদ গাঁথা,
কত অশ্রুময় উপন্যাসের পাতা
আমার এই ভাঙা বুকখানি।
,
আমি কি নিজেই জ্বালাইনি এই অগ্নি, দাবদাহ
নিজের কন্ঠেই ঢালিনি গরল?
আমিকি নিজেই ছিঁড়িনি এই
গোলাপের রাঙা পাপড়িগুলি ?
পানপাত্র করি নাই একেবারে খাঁ খাঁ মরুভূমি ? নিজের হাতেই খুড়ি নাই নিজের কবর ,
এই বুকে জ্বালাইনি চিতা ?
একেবারে পোড়া কাঠখন্ড করি নাই
এইটুকু সামন্য জীবন আমার?
করিনি এই বুকে অনন্ত সূর্যাস্ত ,
নক্ষত্রের খসে পড়া?
আমি কি তোমার জন্য এই নিরিবিলি পঙক্তিমালা , গাঢ় শিল্পকর্ম , মুগ্ধ উপমা
করিনি এলোমেলো?
বলো এতটুকু করিনি তছনছ নিজের জীবন?
ফেলিনি কি দু'ফোঁটাও তপ্ত চোখের জল?
, ,
তাহলে তুমি কেন
পারনাই এতটুকু মূল্য দিতে
এতটুকু ঠাঁই দিতে তোমার হৃদয় প্রকোষ্ঠে?
কেন আর সকলের মতো
আমাকেও
উপেক্ষার অনন্ত তুষার দেশে
এইভাবে ফেলে গেলে শেষে????
______গোধূলী স্বপ্ন

চাপু এবং ভালোবাসা

চাপু এবং ভালোবাসা
==================
বিলাস মুগ্ধ চোখে বেলার দিকে
তাকিয়ে আছে। সুন্দরের তো একটা
মাত্রা আছে ! বেলার সৌন্দর্যের
কোন মাত্রা নেই।মাত্রাহীন সুন্দর।
- কি ব্যপার , এমন বোকার মতো
তাকিয়ে আছে কেন? বেলা হাসতে
হাসতে জিজ্ঞাসা করলো।
-না ভাবছি তোমার একটা নাম দেবো।
বিলাস বললো।
- তুমিতো নাম দিয়েছো, ঐতি। আবার
কি দেবে?
-ঐতি তো কবিতায় ব্যবহার
করেছিলাম। কিন্তু তোমাকে সবসবময়
ডাকার জন্য একটা নাম দরকার।
তোমার নাম চাপু।
-চাপু! এটা আবার কি?
-চাপু মানে চাইনিজ পুতুল। বিস্তর
গবেষনা করে দেখেছি। , তোমার মুখ
পুতুলের মতো। আমার এক ভাগ্নির
চাইনিজ পুতুল আছে।তুমি হুবহু এটির
মতোই। তাই তোমার নাম এখন থেকে
চাপু।
বেলা হাসতে হাসতে চোখে পানি
এনে ফেললো।অনেক কষ্টে হাসি
থামিয়ে বললো ,
-আচ্ছা, ঠিক আছে , এখন বলো নতুন কি
কবিতা লিখেছ।
-বিলাস অন্য দিকে তাকিয়ে বললো,
লিখেছি।
কিন্তু মনে হচ্ছে ঠিক হয়নি। তার
বুকপকেট থেকে একটা ছেড়া কাগজ
দুমড়ে-মুচড়ে পানিতে ফেলে দিলো।
-এটা কি করলে? বেলা চিৎকার দিয়ে
উঠলো।
তুমি কবিতা ফেলে দিলে?সে অবাক
হয়ে তাকিয়ে থাকলো।
-আসলে এখন এই মূহুর্তে তোমাকে
দেখে মনে হচ্ছে ঠিক হয়নি।ভুল
কবিতা।তাই ফেলে দিলাম। বিলাস
বললো।
~
বেলার দুচোখ জুড়ে জল গড়িয়ে পড়ছে।
সে ওড়না দিয়ে মুখ চাপা দিলো। তবুও
কান্নার স্রোত থেমে থাকছে না। তার
সারা শরীর কেপে উঠছে।
বিলাস থতমত খেয়ে গেলো। সে অবাক
হয়ে ভাবলো এমন কি হলো যে, এতো
কান্না শুরু হলো!
বেলার সাথে তার পরিচয় ছয়মাস । এ
পর্যন্ত একবারও বেলাকে সে কাঁদতে
দেখেনি।কিন্তু সে বেলার কান্নার
ছবি কল্পনা করেছিলো। আজ তো সেই
ছবিও ফেল। বিলাস চরম অস্বস্তিতে
পড়লো।
বেলার চুলে হাত বোলাতে বোলাতে
সে বললো , সরি আসলে তুমি এভাবে
নেবে বুঝিনি।
-বেলা কথা বলতে পারছিল না।সে বহু
কষ্টে বললো, তুমি জানো না, তোমার
সব কবিতাই আমি জমাই। তোমার সব
কবিতাই আমার কাছে আছে। এরপরও
আমার সামনে কবিতাটি তুমি ছুড়ে
ফেললে! সে আবার কাদতে লাগলো।
-বিলাস বললো, ঠিক আছে এক্ষুনি
কবিতাটি নিয়ে আসছি।এই বলেই
শার্ট খুলতে লাগলো।
-খবরদার ! তুমি পানিতে নামবে না। গত
সপ্তাহে তোমার জ্বর হয়েছিল। এই
সন্ধ্যায় পানিতে নামলে তোমার
নিউমোনিয়া হয়ে যাবে।বেলা চমকে
উঠলো।তার চোখে এখনো জল।
কাগজটির দিকে সে এখনো তাকিয়ে
রয়েছে।নিউজপ্রিন্টের কাগজটা দ্রুত
পানির সংগে মিশে যাচ্ছে।
-বিলাস অপরাধীর মতো বললো, আসলে
কবিতাটি ভালো হয়নি। আজ যাতে
অবশ্যই আরেকটি লিখে কাল সকালে
তোমার স্কুলের সামনে দাড়িয়ে
থাকবো।
~
-চোখ ভরা রাগ নিয়ে তার দিকে
তাকালো বেলা।
বিলাস চুপ হয়ে গেলো। সে জানে তার
কবিতা কেউ খারাপ বললে খুব রেগে
যায় বেলা।
একবার বিলাসের একটি কবিতা পড়ে
বেলার বান্ধবী শ্যামলী বলেছিলো,
খুব কাঁচা হাতের। ব্যাস !ক্লাসের সব
মেয়ের সামনে শ্যামলীর গালে চড়
মেরে দিয়েছিল বেলা।এরপর কাঁদতে
কাঁদতে বাড়ি। আজও শ্যামলীর সঙ্গে
সে কথা পর্যন্ত বলে না।
~
বেলা তার ব্যাগ থেকে খাতা আর কলম
বের করে বিলাসের হাতে দিলো।
-তাড়াতাড়ি ওই কবিতাটি লিখে
ফেলো। তোমার যা ভুলো মন।
গতকালের কবিতা আজ মনে থাকে না।
বিলাস ভয়ে ভয়ে খাতাটি নিলো।
সত্যিই তার কবিতাটি মনে নেই। তখন
কি লিখেছিলো এখন কি করে মনে
থাকবে? কলম নিয়ে আকাশ-কুসুম
চিন্তা করতে লাগলো সে।
~
বেলা নদীর দিকে তাকালো। নদীতে
খুব স্রোত। দূরে আকাশে মেঘ জমছে।
এমনই এক মেঘলা দিনে বিলাসের তার
প্রথম পরিচয়। স্কুল থেকে সে
ফিরছিলো। পথে তার বান্ধবী অনন্যা
বললো , দেখ বেলা ঐ ছেলেটিকে,
চশমা পরা, রোগা মতো, লম্বা। সে
একজন কবি। পাগলা কবি। ভাইয়ার
বন্ধু।সে প্রতিদিন বিকালে ছাদে
দাড়িয়ে তার লেখা কবিতার প্লেন
আকাশে উড়িয়ে দেয়। কবিতা লেখে
সব ফাউল ধরনের। জঘন্য, বাজে। !কিন্তু
কেউ তার নাম জিজ্ঞাসা করলেই সে
পরিচয় দেয় সে একজন কবি। অনন্যা
হাসতে থাকে।
মজার ব্যপার, ঠিক তখনই কবিতার
একটা প্লেন তার পায়ের কাছে এসে
পড়ে।
বেলা প্লেনটি তুলে নেয়। কাগজের
প্লেনটির ভাজ খুলে কবিতাটি পড়ে
সে। কবিতার নাম " ভালোবাসার
দাবী " কবিতাটি পড়ে বেলার চোখে
পানি এসে যায়। এতো সুন্দর!এতো
সুন্দর!
~
এরপর বেলা প্রতিদিন বিকেলে
রাস্তায় দাড়িয়ে তার কবিতা পড়তো।
এভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর হঠাৎ
একদিন সামনে দাড়িয়ে বলে, দেখুন,
আপনি যদি আর কখনো আপনার লেখা
কবিতা এভাবে নষ্ট করেন, নিজেই
ছাদ থেকে লাফ দেবো। আপনার সব
কবিতা আজ থেকে আমার কাছে জমা
রাখবেন। কথাগুলো বলেই বেলা চুপ
হয়ে গেলো।
সে এটি কি বললো? কিভাবে? সে
ভয়ে কাঠ হয়ে গেলো।
ছেলেটি মুচকি হেসে বলেছিলো, জো
হুকুম মহারানী।
~
-এই চা, এদিকে এসো। বেলা, চা
খাবে? বিলাস চায়ের কাপ হাতে
নিয়ে জিজ্ঞাসা করলো।
বেলা চমকে বাস্তবে ফিরে এলো।
-না, চা খাবো না।সে উত্তর দিলো।
এরপর জিজ্ঞাসা করলো লেখা
কতোদূর? বৃষ্টি আসছে। তাড়াতাড়ি
করো। আকাশে খুব মেঘ করেছে।
বিলাস কিছু না বলে চায়ের কাপে
চুমুক দিলো।
~
বেলা আবার অন্যমনস্ক হয়ে পড়লো।
সে একটা লাল রঙের ডায়রি
বানিয়েছে। ডায়রিতে বিলাসের সব
কবিতা জমা আছে। তার খুব ইচ্ছা ওই
কবিতাগুলো দিয়ে একটি বই বের
করবে। বিলাসের কবিতার বই। সে
দেখে চমকে উঠবে। বিলাস তার কোন
কবিতাই গুছিয়ে রাখে না। যখন সব
কবিতা দেখবে তখন হা হয়ে যাবে।
বেলা খোঁজ নিয়ে শুনেছে প্রায় বিশ
হাজারের মতো টাকা হলে বই
ছাপানো যায়। সে টাকা জমাচ্ছে।
প্রতিদিনের টিফিনের টাকা, রিক্সা
ভাড়া জমিয়ে প্রায় আট হাজার টাকা
জমিয়েছে। আরো জমাতে হবে।
বিলাসের কবিতার বই অবশ্যই ছাপা
হবে। এমন সুন্দর কবিতাগুলো নষ্ট হতে
পারে না।
তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে। আকাশে মেঘ
গুড়গুড় করছে। বৃষ্টি আসবে।
~
বিলাস কবিতা শেষ করলো। সে বললো
, চাপু, বোস। শোন তো কেমন হলো।
বিলাস জোড়ে জোড়ে কবিতা আবৃতি
শুরু করলো।
বেলা শুনতে থাকলো।
~
বিলাস কবিতা পড়া শেষ করে বেলার
দিকে তাকালো।
সে অবাক হয়ে দেখলো বেলার চোখে
পানি। বেলা কাঁদছে।
বিলাস পরম যত্নে বেলার গাল গড়িয়ে
পড়া চোখের পানি মুছে দিল।
হঠাৎ আকাশ কাঁপিয়ে বৃষ্টি শুরু হলো।
বেলা বিলাসের কাধে মাথা রাখলো।
তারা বৃষ্টিতে ভিজতে থাকলো।
____ গোধূলী স্বপ

সিংগেল.....

আপনার সারাদিনের ব্যস্ততায় কারো
মাথাব্যথা নেই... কারন আপনি
সিংগেল.....
আপনি রাত বারোটার পরেও
নিশ্চিন্তে ফোনে ফ্রেন্ডসদের সাথে
আড্ডা দিতে পারেন..কারন আপনি
সিংগেল...
হুটহাট যে কারো এমার্জেন্সিতে
আপনি বের হতে পারেন,কারো
অনুমতির প্রয়োজন নেই... কারন আপনি
সিংগেল...
দিনরাত অনলাইনে এক্টিভ থাকেন
আপনি,কারো কৈফিয়তের তোয়াক্কা
নেই..
কারন আপনি সিংগেল..
জন্মদিনগুলোতে বিশেষ কারো
শুভেচ্ছা পাওয়ার অপেক্ষার কোন
বালাই নেই....কারন আপনি সিংগেল....
রাতের ঘুমগুলো হয় আপনার
নির্ভেজাল,কারো ফোনের অপেক্ষায়
আপনি থাকেন না....কারন আপনি
সিংগেল.....
খাওয়াদাওয়াতে নেই কোন
সাঁধাসাঁধি...
কারন আপনি সিংগেল...
মাথার চুলগুলো দু দিনেও চিঁরুনি ছোঁয়
না...
কারন আপনি সিংগেল.....
জুগল সমাজের মাখামাখিতে আপনি
বিরক্ত...কারন আপনি সিংগেল.....
সকল সিংগেল জীবন সুখি হোক

নকশী কাঁথায় স্বপ্ন

নকশী কাঁথায় স্বপ্ন
==================
এভাবেই ধীরে ধীরে একদিন বিলুপ্ত
হব তোমার অস্তিত্ব থেকে,
হয়ত বা ফিরে আসব তোমার কাছ
থেকে এক মুঠো অভিমানে,
নীরব প্রস্থানে রয়ে যাবে কিছু
কথা;কষ্টের তিব্রতায় না পাওয়ার যত
ব্যাথা।
এখন আর কাঁদিনা,তুমি কষ্ট পাও বলে,
তবুও ভয় হয় আমার অবিকৃত স্বপ্ন
থেকেও যদি তোমাকে হারাতে হয়।
হয়ত আবারো দেখা হবে, বিষাদ বা
ক্লান্তময় দিনের শেষে,হয়ত আমাকে
আবারো খুঁজবে যখন খুব একা হয়ে
যাবে,কিন্তু আমাকে আর পাবে না,
সেদিন ও হয়ত আমি ভালোবাসার
নকঁশি কাঁথায় স্বপ্ন বুনে যাবো আপন
মনে।

শূন্যতার দিকে

শূন্যতার দিকে
================
*
শিশির এক দৃষ্টে তমার দিকে চেয়ে
রইলো।
-স্যার, আমার হাতের কাঁকন জোড়া
দেখছেন?
-হু । তাইতো দেখছি। খুব সুন্দর! কে
দিয়েছে?
তমা চোখের পানি মুছতে মুছতে
বললো, আমাকে গতকাল পাত্রপক্ষ
দেখতে এসেছিল। এগুলো তাদেরই
দেয়া। তমার চোখের পানি গাল বেয়ে
পড়তে লাগলো।
*
শিশির ভেবে পেলো না সে কি
করবে? তার কি করা উচিত? নিজের
মধ্যে বড় শূন্যতা বোধ করলো। এতো
সুন্দর একটা মেয়ে তার সামনে বসে
কাঁদছে অথচ তার কিছুই করার নেই।
তার ইচ্ছা হলো তমার মাথায় হাত
রেখে বলবে, এই মেয়ে, কাঁদছো কেন?
আমি তো আছি।
*
সে কিছুই করতে পারবে না। দারিদ্র
তাকে গ্রাস করেছে। নিজের পড়ার
খরচ চালানোর জন্য দুটা টিউশনি
করে। বাবা-মায়ের অভাবের সংসারে
রয়েছে দুই ছোট বোন। তাদের কথা
তাকে ভাবতে হয়। প্রায়ই কল্পনা করে,
একদিন সে ভালো চাকরি পাবে, সবার
দুঃখ ঘোচাবে।
*
তমাকে সে পড়াতে এসেছিলো তিন
বছর আগে এ তিন বছরে তমা যেমন
তেমনই আছে। একটুও বদলায়নি। এ
মেয়েকে নিয়েই শিশির মাঝে মধ্যে
স্বপ্ন দেখতো পাশাপাশি হাঁটার,
ভালো কোন রেস্টুরেন্টে গিয়ে
খাওয়ার।
*
শিশিরের ভালো লাগাটা তমাকে
বলা হয়ে ওঠেনি। কারণ তমারা ধনী।
তাদের বাড়ি- গাড়ি আছে।তবে ধনীর
মেয়ে হলেও তমা উচ্ছৃঙ্খল ছিলো না।
পোশাকে ,চলনে, ব্যবহারে সে খুবই
শালীন। হয়তোবা এজন্য নিজের
অজান্তেই তমাকে সে ভালোবাসতে
শুরু করেছিল।
*
- স্যার, আজ আর পড়বো না। আমার
মনটা ভীষণ খারাপ। আপনার কি স্যার
কিছুই করার নেই? আপনি কি স্যার
পারেন না আমাকে নিয়ে যেতে
আপনার সাথে। কাঁদতে কাঁদতে
কথাগুলো বলে তমা ভেতরে চলে গেল।
*
শিশির বোকার মতো শুধু চেয়ে রইলো।
কিছুক্ষন পর তমার মা রুমে এসে বললেন
, স্যার , তমার বিয়ে ঠিক হয়েছে।
ছেলে কানাডা থেকে এসেছে বিয়ে
করতে। এক মাসের ভেতর চলে যাবে।
তাই দেরি করলাম না। এতো ভালো
পাত্র তো আর সহজে পাওয়া যায় না!
স্যার , এই খামে আপনার বেতন। কাল
থেকে আপনাকে আর কষ্ট করে আসতে
হবে না। তবে স্যার তমার বিয়েতে
অবশ্যই আসবেন। কার্ড পাঠিয়ে
দেবো।
শিশির দাঁড়িয়ে কথাগুলো শুনলো।
কিছুই বললো না। শুধু বললো , যাই।
*
শিশির রাস্তায় নামলো। তার বুকে
প্রচন্ড শূন্যতা বোধ হলো সে হাঁটতে
লাগলো। ধীরে ধীরে যেন সে শূন্যের
দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আকাশে মেঘ
জমেছে। ফোটা ফোটা বৃষ্টি শুরু হলো।
বৃষ্টি কি তার কষ্ট ধুয়ে ফেলতে
পারবে? বাস্তবতার কাছে অসহায়
শিশির বুকে চেপে থাকা কষ্টগুলো
বৃষ্টির কাছেই সমর্পণ করলো।

ফেলু মিয়া

তখন ৫ম শ্রেণীতে পড়ি।
একটা ছড়া প্রতিযোগিতায় এই ছড়াটা
লিখে প্রথম হয়েছিলাম। কোন এডিট
ছাড়াই সবার সাথে শেয়ার করলাম ।
*
ফেলু মিয়া
==========
এই পাঠশালারই একটি ছেলে
নাম তার ফেলু মিয়া
স্বভাব চরিত্র অতি নম্র
পড়াশুনা করতো মন দিয়া।
এমন কোন ছাত্র নেই
পেরে ওঠে তার সাথে
পরীক্ষাতে উত্তরগুলো থাকতো
তারই পায়ে হাতে।।
দুইয়ে দুইয়ে পাঁচ হয়
সাতে সাতে ছয়
অংকে তার পাশ মার্ক
নেই আর কোন ভয়।।
ইংরেজীতে বেজায় ভালো
বিজ্ঞানেতে পাকা
দুটোতেই পায় সে মস্ত বড়
দুইটি গাড়ির চাকা।।
বাংলায় সে পটু বটে
ধর্মে চলে বাঁকা
পাশ হবে তবু বলে সে বেড়ায়
হেড মাস্টার তার কাকা।।

খোলা চিঠি 1

খোলা চিঠি
---------------
তোমার ছাপোষা ভালোবাসায়
সহানুভূতির মোহর লাগিয়ে আমার
বুকের বা পাশের ব্যাথাটা আর
বাড়িওনা ৷ অনেক দিন হলো বুকের
ব্যাথাটা খুব যন্ত্রনা করছে ৷ আজকাল
আর চাইলেই চিঠি লিখতে বসে পড়তে
পারিনা হুটহাট করে ৷ এখন তো আর খুব
ভালো দেখতে পাইনা! তাই ৷ সেদিন
ভুল ওষুধ খেয়ে ফেলে কয়েকদিন ভুগতে
হলো ৷ অবশ্য বয়সতো আর কম হলোনা ৷
চশমাটা বদলে ফেলবো ভাবছি ৷ কিন্তু
অল্প বিস্তর অর্থসঙ্কটের জন্য করা
হচ্ছে না ৷ তোমার দেয়া আংটিটা
বিক্রি করে দিয়েছিলাম বেশ
কয়েকমাস আগে, যেটা তুমি আমায়
বিয়ের পর প্রথম দিন দিয়েছিলে ৷ এখন
তোমার স্মৃতি বলতে ওই মাফলার
খানাই ৷ তবে তুমি ভেবোনা, আমি মন
খারাপ করিনি ৷ সোনার
আংটিখানাতে কি আছে! তুমিতো
পাশেই আছো ৷ জানো, আজকাল চিঠি
পড়তে বসলেও অক্ষরগুলো কেমন যেন
গুলিয়ে যায় ৷ কেন যেন মনে হয়
প্রতিটি চিঠিই চোঁখের জলে নোনতা
করে পাঠিয়েছ, তাই অক্ষর গুলো এমন
ঘোলাটে ৷ আসলেই কি চোঁখের ভুল?
নাকি................
যাই হোক, টুকুনের ফিরে আসার কথা
শুনে খুব উচ্ছ্বসিত হলাম ৷ ও কি এখনও
তোমার হাত ধরে পার্কে বেড়াতে
যায়? নাকি তোমার হাতের ছোটো
আঙুলটা এখন আর পথ চলতে প্রয়োজন হয়
না?
হবেই বা কি করে বলো ? এখনতো ও
অনেক বড় হয়েছে ৷ যে নিজেই
বিলাসবহুল গাড়ীতে চড়ে ঘুরে বেড়ায়
সে কি আর কুঁচকে যাওয়া চামড়ায়
হাত রেখে ভরসা পাবে? যাক, তোমার
পায়ের ব্যাথাটা কমেছে তো! কে
মালিশ করে দেয়? রোজ রাতেই কি
ব্যাথা হয়? আমি তো কখনোই ব্যাথাটা
বাড়তে দিতে চাইতাম না ৷ কিন্তু তুমি
নিশ্চয়ই তোমার পুরোনো
খামখেয়ালির অভ্যাস বশত এখনও কষ্ট
পাচ্ছো ৷ ওরকম করোনা ৷ ঘুমিয়ে পড়ার
পর গায়ে চাদরটা কে টেনে দেয়?
টুকুন? নিয়মিত ওষুধ গুলো তিনবেলা
দেয় তো? প্রেশার টা কমেছে তো?
এখনও তেলাপিয়ার মাথা খাও? নাকি
জড়তা হয় নিজেকে বোঝা ভেবে?
ওরকম কিছু ভেবোনা ৷ টুকুন তোমায়
বড্ড ভালোবাসে ৷ নিজের একটু যত্ন
নিও ৷ এত চাপা স্বভাবের হলে কি
করে হয় বলো?
এখানে আমি ভালোই আছি বলতে
পারো ৷ এখানকার সবাই বেশ ভালো
আর আন্তরিক ৷ খুব যত্ন করে বুয়াটা ৷
মাঝে মধ্যে একটু বিরক্ত হয় ৷ তা আমি
কিছু মনে নিই না ৷ শুধু মাঝেমাঝে
পাশের রুমের ভদ্রমহিলা একটু বাজে
বকে ৷ তবে তাতেও আমি কিছু মনে
করিনা ৷ আমিতো জানিই, ওরকম বয়স
হলে সবাই-ই একটু আধটু বকে ৷ কি বলে
শুনবে? হা হা ৷ বলে তুমি নাকি আর এ
পৃথিবীতে নেই ৷ আমি অযথাই কষ্ট করে
ভাঙা চশমায় চিঠি লিখে সময় নষ্ট
করি ৷ তোমাকে নাকি সাত বছর আগেই
পারিবারিক কবরস্থানে শুইয়ে দিয়ে
আসা হয়েছে ৷ আমি নাকি শেষ বয়সে
বিভ্রান্তি নিয়ে বেঁচে আছি ৷ হা হা!
কি পাগল বলোতো! তুমি না থাকলে
প্রতি জোছনায় কিভাবে ঘুরে বেড়াই
তোমার হাত ধরে? আমি কি ভুল
দেখতে পারি? যত যাই হোক, তোমার
গায়ের গন্ধটাতো আর ভুল হতে পারে
না ৷ কি যে বলবো! ওনার আসলেই
প্রলাপ বকার রোগটা ধরে গেছে ৷
বৃদ্ধাশ্রমে আসলে যে অবস্থা হয় আর
কি অনেকের!
যাই হোক! ভালো থেকো ৷ আর অত
দেরি করে করে চিঠি দিও না ৷ একটু
জলদি দিও ৷ তোমার মাফলার টা
যত্নে তুলে রেখেছি ৷ আবার যখন
শীতের সন্ধ্যায় আসবে এটা জড়িয়েই
ব্যালকনি তে ঘুরে বেড়াবো ৷ কেমন!!

**অভিমানী**

**অভিমানী**
==================
*
এই তুই এখন কি করছিস রে ? তুই কি এখন
ছাদে উঠতে পারবি?ফিসফিস করে
বলল নিশা।
- কেন?
-বৃষ্টি হচ্ছে।
-হু, দেখছি জানলা দিয়ে।
-দেখা আর ছুঁয়ে দেখা এক কথা নয়।
নীরবকে বোঝাতে চেষ্টা করে নিশা।
-যদি অসুস্থ হয়ে পড়ি।
নিশা হাসল , তারপর বলল, বোকা
ছেলে , বৃষ্টি ছুঁয়ে দেখলে কেউ অসুস্থ
হয়! আমিতো বৃষ্টি হলেই হাত বাড়িয়ে
ছুঁয়ে দেখি।
-এই পাগলী নাছোরবান্দা । তাই নীরব
যুক্তি না খুঁজে ছাদে উঠে পড়লো।
ইলশেগুঁড়ি হচ্ছে।
নীরব নিশার মতো অত রোমান্টিক না ,
তাই তার বিরক্তি লাগছিল।
ধমকের সুরে বলল ,তোর মাথায় কি
মাঝরাতে ভূত চেপেছে? আমার ঘুম নষ্ট
করে ফাজলামো করছিস,তাই না।
আচ্ছা বলতো প্রতিদিন রাতে এভাবে
আমার ঘুম কেন নষ্ট করিস?তোর ঘুম
আসে না বলে জগতের আর কেউ কি
ঘুমাতে পারবে না? নীরবের গলা শুনে
নিশা স্থির হয়ে গেল। কেবল কানে
ভেসে আসছিল বড় বড় নিশ্বাস ফেলার
শব্দ। তারপর ওপাশ থেকে টুট করে শব্দ
এলো।
~
এরপর অনেক বৃষ্টি বেলা
কেটেছে,নিশা আর ফোন করেনি
নীরবকে। বিরক্ত করেনি কারণে
অকারণে। কদম ফুল হাতে দাঁড়াতে
বলেনি স্টেশন রোডের বকুলগাছটার
নিচে। নিশার অভিমান আর নীরবের
কঠোরতা দুজনকেই দুপ্রান্তে নিয়ে
গেল।দুজনের দূরত্ব বেশি নয় , কিন্তু
অভিমানের গভীরতা অনেক বেশি। খুব
বেশি।।

ঈর্ষা

..হিংসা বা ঈর্ষা, ইংরেজীতে যাকে
বলে jealousy খুব কমন একটা জিনিস।
সবার আছে কারো কম কারো বেশি।
হিংসা অনেক রকম..সৌন্দর্যে
হিংসা,সম্পদে হিংসা আবার কারো
ভালবাসায় হিংসা।
আপনার আপনজন আপনার চেয়ে বেশি
অন্য কাওকে প্রধান্য দিক এটা আপনি
কখোনই চাইবেন না।আপনার জায়গাটা
অন্য কেউ নিয়ে নিবে ভাবতেও
পারেন না আপনি।সমস্ত শরীরে
হিংসার বন্যা বয়ে যায়। হাতের কাছে
পেলে তখন খুন করতেও মনে হয় হাত
কাঁপবেনা। যে কোন কিছুর বিনিময়ে
আপনার আপনজন আপনার নিজের
জায়গা আপনি কাওকে দিবেন না।
কিন্তু এ সবকিছুর পরাজয় ঘটে যখন
আপনার কাছের মানুষটি আপনার
জায়গাটা অন্যকে দিয়ে দেয়। কিছু
করার থাকেনা আপনার। আপনার রাগ,
হিংসা, ঈর্ষা সবকিছুর পতন ঘটে যায়।
ভেতরে ভেতরে আপনি পুড়তে থাকেন
একটু একটু করে...
হুম... খুব অসহায় এই ঈর্ষা শুধুমাত্র
আপনজনকে ভালবাসেন বলে। যুদ্ধে
শত্রুর হাতে নিজের অস্ত্র তুলে দিয়ে
মাথাপেতে দেওয়া..... হিংসার বলি
দিয়ে দেওয়া শুধুমাত্র তাকে
ভালবাসেন বলে।

বৈরী বন্ধন

বৈরী বন্ধন
=============
কালের প্রহরীর এভারেস্টের মত
দাঁড়াতে পারি উন্নত দৃঢ় পায়ে মাথা
উঁচু করি
হতে পারি ভারি জীবনের
অধিকারীনী।
ভেঙ্গে যেতে পারি তবু মচকাতে
পারিনাতো আর
কাপুরুষে মরে বারে বার,
এ জন্মের আছে ঋণ,আছে গুরুভার,
মৃত্যু দুয়ার থেকে ফিরে এসেছি
কতবার
অনধিকার সে মৃত্যু কভু হতে পারেনি
আমার।
হাঁটি হাঁটি পায়ে আর চলা নয়
নয় কয়েদীর শম্বুক গতি,
চিত্ত বলে বৈরী বন্ধন ছিন্ন করি
এসো ছিঁড়ে ফেলি পতিত ইতিহাসের
ধূসর পান্ডুলিপি।।।।
*
গোধূলী স্বপ

বদলে যাওয়া !

প্রতিদিন আমরা দেখি, মানুষের বদলে
যাওয়া ! দেখি কি বিচিত্র কারনেই
না সম্পর্ক বদলে যায়।প্রয়োজনে
অপ্রয়োজনে বদলায়। সকালে বদলায়,
বিকেলে বদলায়। আলোতে বদলায়,
আঁধারে বদলায়। বদলে যেতে কোন
কারন লাগেনা।বদলে যাওয়া মানুষের
সহজাত প্রবৃত্তি। প্রকৃতির গতানুগতিক
প্রক্রিয়ায় এমনিতেই বদলে যায়।
যারা দুঃখবিলাসী তারা মানুষের এই
বদলে যাওয়াকে মেনে নিতে পারে
না। আর তাই মন:কষ্ট কাছের মানুষটি
কেন এমন হঠাৎ বদলে গেলো, তা নিয়ে
শোকগাঁথা রচনা করেন।
মানুষ কি আসলেই হঠাৎ করেই বদলে
যায়? নাহ! হঠাৎ করে কিছু বদলায় না।
মানুষের এই বদলে যাওয়ার প্রক্রিয়া
অনেকদিন ধরেই চলতে থাকে। এত
ধীরে ধীরে চলতে থাকে যে, আমরা
বুঝতে পারিনা।
~
কখন, কিভাবে, মানুষ গুলো বদলাতে শুরু
করে , তা হয়তো সে নিজেই জানেনা।
পরিবর্তন আসে, কখনো সময়ের সাথে
নিজেকে খাপ খাওয়াতে । কখনো
পরিবেশ বাঁচাতে । কখনো বা
চাহিদার কারনে।
কারন যাই হোক, বদলে যাওয়া …
একজনের জন্য মঙ্গলকর হলেও, অন্যের
জন্য তা হয় ভীষন পীড়াদায়ক।
এক সময় যে মানুষটা দিন রাত গায়ে
গায়ে লেগে না থাকলে ভাল
লাগতোনা, এক মুহুর্ত কথা না শুনলে
মনে হতো শত বছর পিছিয়ে যাচ্ছে,
যার প্রতিটা চলন-বলন, সাবলীল
দৈনন্দিন জীবন-যাপন এক সময় প্রানে
দোলা দিয়ে যেত, হঠাৎ করেই যেন সে
মানুষটা খুব বিরক্তিকর হয়ে উঠে। কেন
যানি তার প্রতিটি নিঃশ্বাস দেহের
অনুতে অনুতে জ্বালা ধরিয়ে যায়! মনে
হয়, সহ্য হচ্ছে না আর! কিছুতেই যেন
নিজের সাথে মিলছেনা। কোথায় যেন
একটু ফাঁক থেকে যাচ্ছে। আর সেই
ফাঁকে সময়ে অসময়ে হু হু করে ঢুকে
যাচ্ছে বিষাক্ত বাতাস।
~
আমিও কখনো কখনো বদলে যাই। ভীষন
আঁধারের কোল ঘেঁসে উদীয়মান ওই
রাতের চাঁদ টুকু দেখে অকারনেই মনের
ভীতরটা বদলে যায়। বুকটা হু হু করে
উঠে। চোখ ফেটে যায় গভীর
অভিমানে।
জীবন এমনই । বড় রহস্যময়। সব রহস্যের
সমাধান পৃথিবী আজো করতে
পারেনি। পারবেও না হয়তো।।

ছায়াহীন মানুষ

আমার দীর্ঘশ্বাসের চেয়ে বড়
কোনো সড়ক নেই এই শহরে
তুমি যে পথে যাবে,
যে গলিতে পা রাখবে বলে
মনস্থির করেছ; সেখানেই আমাকে
পাবে।
আমি ছায়াহীন মানুষ
সহস্র আলোকবর্ষ ঠায় দাঁড়িয়ে আছি
আমি তোমাদের আলো ঝলমলে এ
শহরে কোনো ছাড়পত্র নিয়ে আসিনি,
অর্বাচীনের মতো ঢুকে পড়েছি।
মানুষের ভালোবাসার চেয়ে বড়
কোনো আকাশ নেই
অথচ তোমরা আকাশের
চেয়ে কংক্রিট নিয়ে মেতে থাকো
মৃত্তিকালীন মানুষের চেহারা ভীষণ
অপছন্দ তোমাদের
বলো, আমি যদি আঁধারকে কাছে
টেনে না নিতাম
তোমরা আলো চিনতে কী করে?
তোমরা কেউ আমার কষ্ট
বুঝলে না , হয়তো আমিও
তোমাদের অনুভবের সাগর ছুঁতে
পারিনি।
অনুতাপহীন মানুষের দেশে
আমি দীর্ঘশ্বাস হয়ে বেঁচে আছি।

Friday, December 02, 2016

ইচ্ছে করে

কিছু মানুষ গভীর রাত পর্যন্ত কারো জন্য
অপেক্ষা করে।
একটা ফোন কলের অপেক্ষা করে,
অথবা একটি মেসেজের,
কিছু মানুষ গভীর রাতে অতীতের
পাতা খুলে বসে।
দেখে হারিয়ে যাওয়া মানুষটার
হাসিভরা মুখের ছবি।
অতীতের ভালোবাসা ভরা টেক্সটের
মিথ্যে ভরা লাইনে চোখ ভিজিয়ে
ফেলে।
কেউ কেউ চোখের
সামনে সবচেয়ে ভালবাসার মানুষকে
পর
হয়ে যেতে দেখে।
ইচ্ছে করে বলতেঃ
"চলে যেয়ো না,,
থেকে যাও।
তোমার নরম হাতের মাঝে আমার শক্ত
হাতটা ধরে রাখো।"
জগতে কিছু মানুষ কাউকেই আপন করে
পায়
না।
বড় বড় ভালোবাসার সমীকরনের উত্তর
মেলে না।
কেবল বিশাল বিশাল পাতার লেখা
গুলোর
ওপর একটা লম্বা দাগ টেনে দেয়া হয়ঃ
He
received you!! Never loved you!!
সত্যি ভালোবাসাটাই অপরাধ হয়ে
দাড়ায়।
তাই
কিছু মানুষ রাতে ঘুমায় না।
ঘুম আসে না।
রাতের আকাশের মিটিমিটি
তারারা
যেন
বলতে থাকেঃ
তুমি একা, ভীষণ একা।

খোলা চিঠি

খোলা চিঠি
তোমাকে বলছি, বুঝতে পারছ কি তুমি?
অনেক গুলো কথা জমা হয়ে গিয়েছিল তো , তাই আর কি। কি করে বলব...বুঝতে পারছিলাম না। তাই, এ চিঠির অবতারনা।
সময় হবে তোমার..? তাহলে একটু বসো। পড় চিঠিটা।
জানো!
আজ চুড়ি পড়েছিলাম ; দু হাতে নয়, এক হাত ভর্তি কালো সাদা রেশমী চুড়ি! চোখের আড়াল থেকে তোমার ভালো লাগা টা উপভোগ করেছিলাম।জীবনের
সব রং মুছে যাওয়া মানুষটি রঙিন চুড়ি কি করে পড়বে বলো ? তাই তো কালো সাদাতেই মানিয়ে গেলো।
তুমিই তো একদিন বলেছিলে, "বালিকা আমি বারবার তোমারই প্রেমে পড়তে চাই ।" আচ্ছা কথা টা কি অন্তরের ছিলো, নাকি শুধুই কথা..?
একদিন অনেক অনেকগুলো রেশমী চুড়ি চেয়েছিলাম। বাহারী রঙের দু হাত ভর্তি রেশমী চুড়ি।
আজ হয়তো কিনছো কিন্তু তাতে আমি নেই।
আচ্ছা, এখনোকি এমনি উৎসুক চোখে মনোবলের গতি বাড়াতে কারো মুখ দেখো?
নাকি সেই মুখের আড়ালে আমার এই "ভালো না লাগা" মুখটা অবচেতন মনে ভেসে ওঠে।
এমনটা করো না যেন।
সম্পর্কের অনেক গুলো দিন...!অনেক গুলো ঘন্টা, মিনিট, সেকেন্ড, অনেক গুলো মুহূর্ত..! ভাবতেই কেমন জানি মাথা গুলিয়ে যায়....
অনেক সময় অনেক কথার সমাহরে তোমায় হাসিয়েছি,
একাকিত্বের সময় টায় তোমায় সজ্ঞ দিয়ে তোমার
নিরব আত্নার প্রান সঞ্চার করেছি। এসবের কোন মুল্য খুজিনি ।পাগলীর মত শুধুই বার বার অভিমান করেছি
আর তোমার বকা শোনার জন্য অপেক্ষা করেছি।
এত গুলো দিনের সঙ্গী হারিয়ে, হঠাৎ করে চিরতরে একা হয়ে যাওয়া। সামনের দিন গুলো চোখে ঝাপসা ....
ধরতে না পারা দুটি হাতের অভাব বোধ....
বহুল প্রতীক্ষিত একটা মুখ, এক ঝলক হাসি !
না পাওয়ার শুন্যতা.....
এত্তগুলো হতাশা, জ্বলে উঠা দুটো চোখ। তোমায় ফিরে পাওয়ার জন্য মৃত্যুর প্রতীক্ষা...
বন্ধ চোখের গড়িয়ে পরা গরম জল.......
কিছু দিন ধরেই কথা গুলো মাথায় ঘুরছে। আমি আর তোমাকে ফিরে পাবো না।
তাই খুব ভয়ে আছি, কখন কি হয়! আসলে এক রোখা জিদের সময় টা পার করে এসেছি তো, তাই আর কি। সময় তো এখন, শুধু অসহায়ত্বের দাবিদার!
সময়ে কি হয় তা তো বলা যায় না।
তবে আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে, আমি হীন সময় গুলো কিভাবে কাটাও তুমি !
যাই বলো না কেন, সারা দিনের ব্যস্ততার সময় কাটিয়ে ঘুমের আগে হলেও "আমার এই ভালো না লাগা মুখ" টা তোমার ঠিকই মনে পড়বে। প্রতিদিনের কিছু সময় যে , আমার জন্য বরাদ্দ ছিলো। এই সময় টা কি করবে তুমি..? হাজার জনের মাঝ থেকে আমার হাসি টা তো আর একবারও শুনতে পাবে না তুমি... তখন!
দিন যেতে যেতে আমার উপর হাজারো ধুলো পরে যাবে। বিস্মৃতি হয়ে যাবো আমি!
ব্যস্ততার সময় ফুরিয়ে যাওয়ার পর যখন একেবারে একা হয়ে যাবে, যখন তোমার অর্ধাঙ্গী ও থাকবে না পাশে;
সে সময় এর কোন উষ্ণ সকাল বা বিকালে হাজারো ধুলো পরা আস্তরণ থেকে কি "আমার এই ভালো না লাগা মুখ টা " চোখের কোণে ভাসবে..?
যদিও বা ভাসে আমি তখন অনেক দূরে পৃথিবী থেকে; আকাশের তারা হয়ে তোমার শুন্যতা উপভোগ করবো।
সব শেষে,
তুমি ভালো থেকো। সব থেকে ভালো। 😊😊
এই, এবার চোখ তোলো। চিঠি তো শেষ। তোমার কি মন খারাপ হয়ে গেলো? .. মন খারাপ করো না, তুমি তো জানোই আমি আর কেমন লিখতে পারি।।।
___মম

তারপর?

তারপর?
___পুর্ণেন্দু পত্রী
তারপর?
তারপর শেষ হল চোদ্দ বছরের অজ্ঞাতবাস।
সে আমাকে দেখে ডুকরে উঠল
---তুমি এমন বিবর্ণ কেন?
আমি তাকে দেখে চমকে উঠলাম
---তুমি এমন বিদীর্ণ কেন?
সে বললে
---আমার হাতের দিকে তাকাও।
তার হাতে ঘর-পোড়া আগুনের চাকা-চাকা
ছেঁকা
---আমার বুকের দিকে তাকাও।
তার বুকে ভাঙা রাজবাড়ির সমস্ত ইট পাথর।
---আমার চোখের দিকে তাকাও।
তার চোখে উপুড় হয়ে আছে দুটো মরা ভ্রমর।
আমি ভিজে বাতাসের মত জিজ্ঞেস করলাম
---তোমাকে কাঙাল সাজাল কে?
সে পাতা-ঝরার শব্দে জানাল
---স্বপ্নের দরজা খুলে দিয়েছিলাম যাকে।
তারপর?
তারপর আমি তাকে সাজাতে বসলুম
আমার নিজের ভিজে পালকে।

প্রিয়

কিছু ভালোলাগার দল রক্তে মিশে
থাকে
যা ভাবতেই শুষ্ক ঠোঁটে প্রাণ নেমে
আসে
হয়তো এসব আমার ক্লান্তিহীন চর্চা
হয়তো বা ভুল|
প্রিয় 'তোমাকে' ভুলিয়ে দিচ্ছি
রাতের কালোয়
মিলিয়ে যাচ্ছ তুমি অতীত ক্ষয়ের
ভীরে
হয়তো একা আমি এই ক্ষয়ের শহরে
হয়তো বা মৃত|
খুব ভোরে এখন আর শিউলী ঝরে না
চোখের উঠোন-কূল জলে ছেয়ে থাকে
হয়তো শিউলী ঝরে হয়তো বা জলেই
হারায়|
ভালোলাগার বাড়াবাড়ি চর্চারা আজ
স্বাভাবিক
তোমাকে ভালোবাসার অভ্যাসটাই
অপরিবর্তনীয়
হয়তো তা ঐশ্বরিক হয়তো বা আমার
অযোগ্যতা|
পাপ জমিয়েছো আমায় ভালোবাসতে
গিয়ে...?
তবে একাই হাঁটবো এই শুষ্ক মরুর রুক্ষ
পথে
হয়তো তোমার নরক যন্ত্রনা ঘুঁচবে
হয়তো বা পাবে শান্তির স্রোত|

এক টুকরো স্বপ্ন

... কেমন হবে ভেবে বলত দেখি,
যদি তোর মনের উঠোনে আর কুয়াশা
না সাজাই,
যদি তোর পায়ের কাছে শিউলি
হয়ে না ঝরে পড়ি,
এলোমেলো ভাবনা হয়ে তোর আকাশে
আর হানা না দেই,
এক টুকরো স্বপ্ন হয়ে নীলচে চোখের
কোণে আর জেগে না উঠি,
তুই কি অভিমানে গাল ফুলাবি ?
.
পাগলামি গুলোকে ছুটি দিয়ে
যদি চলে যায় অনেক দুরে মেঘের
ওপারে,
যদি আর না ফিরে আসি তোর কাছে,
তুই কি আমাকে মনে রাখবি? বলনা কি
করবি?
.
জানিস আমার মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয়
তোর নীলচে চোখের মায়ায় হারাতে,
বিকেলের নরম রোদে আলতো স্পর্শে
তোর হাত ধরে হাটতে,
দুর থেকেই তোকে ভালবাসতে ইচ্ছে
করে। তোকে
পেতে ইচ্ছে করে না,
কারণ, তোকে
পেলে তো ভালবাসা থমকে যাবে।
তোকে পেতে চাই না, তোকে অনুভব
করতে চাই।
তাই একদিন চলে যাব তোর কাছ থেকে
তোকে চুরি করে নিয়ে।
সেদিন নিজেকে হারিয়ে খুজে পাবি
আমার মাঝে।
.
.

পাগলীর_প্রলাপ

ব্যস্ত কোন কাজের দিনে চার মাথার
মোড়ে দাঁড়িয়ে
ভিড় ঠেলে হাতটা ধরে যদি
বলি,"ভালবাসি"
বকবে নাতো আমায়???
মাঝরাতে হঠাৎ যখন ঘুম ভাঙবে
জড়িয়ে ধরে বলি যদি," ভালবাসি"
খুব কি বিরক্ত হবে???
খুব যখন কষ্ট হয় কান্নায় যখন চোখের
পাতা ভারি হয়ে আসে
চোখে চোখ রেখে যদি বলি,
"ভালবাসি"
খুব কি অবাক হবে??
যাই হও তবুও বার বার বলবো
"ভালবাসি" ।
আমি শুনবো....
তোমার মিথ্যে করে বলা '
ভালোবাসি'
এক বুক তৃষ্ণা জমে আছে.......তোমার
ভালবাসি শব্দ সব তৃষ্ণা দুর হবে.......
# পাগলীর_প্রলাপ

বিহঙ্গ

আমি ডানা ঝাপটানো একটি নিঃসঙ্গ
বিহঙ্গ যেন,
টর্নেডো ভেঙেছে কপাট,
ভূমিকম্প গুড়িয়ে ঘর,
সুনামীর তীব্র স্রোতে উঠেছে ভয়াল
ঝড়।
মনের গভীরে চোখের জল ঝড়ে ঝড়ে
হয়ে গেল যেই নদী,
ধীরে ধীরে বাড়ছে সে নদীর জল, এই
প্লাবন এলো বলে,,,
কোন মায়াবী খাঁচায় তো তোমাকে
পুরে রাখিনি,
তুমি মুক্ত বিহঙ্গ, উড়ে যাও যেখানে
চাও।
আমি বড়জোড় লিখতে পারি একঝাক
চিঠি।
প্রেমের অনন্তলোক ছুঁয়ে,
আমার চিঠিগুলো কাগজের পতঙ্গ হয়ে,
একের পর এক ঢুকে পড়বে তোমার
জানালা গলে
দুর্নিবার পূর্ণিমার আকাশ ছেঁয়ে
দেবে তমশায়,
নিশি জাগা তুমি আর তোমার নতুন
তুমি
নিশ্চিত বঞ্চিত হবে জোছনার মাধুরী
থেকে।
আমার আকাশেও এখন আর চাঁদ ওঠেনা,
এই ভয়ার্ত আঁধারে কার কাছে যাব
আমি, তোমাকে ছাড়া?
সেই তুমিই রয়েছ ফিরে, হয়েছ বৈরী,
অসহায় আমি আজ আকাশের মত একলা।
তোমার কাছে ফিরে যাবার আর কোন
পথ নেই তো খোলা।
এখন হাতড়ে বেড়াই,
কেবলই স্মৃতি, কেবলই স্মৃতি, কেবলই
স্মৃতি,
বারবার মনে পড়ে একটি মায়া মুখ!

দীর্ঘশ্বাস

আমার দীর্ঘশ্বাসের চেয়ে বড়
কোনো সড়ক নেই এই শহরে
তুমি যে পথে যাবে,
যে গলিতে পা রাখবে বলে
মনস্থির করেছ; সেখানেই আমাকে
পাবে।
আমি ছায়াহীন মানুষ
সহস্র আলোকবর্ষ ঠায় দাঁড়িয়ে আছি
আমি তোমাদের আলো ঝলমলে এ
শহরে কোনো ছাড়পত্র নিয়ে আসিনি,
অর্বাচীনের মতো ঢুকে পড়েছি।
মানুষের ভালোবাসার চেয়ে বড়
কোনো আকাশ নেই
অথচ তোমরা আকাশের
চেয়ে কংক্রিট নিয়ে মেতে থাকো
মৃত্তিকালীন মানুষের চেহারা ভীষণ
অপছন্দ তোমাদের
বলো, আমি যদি আঁধারকে কাছে
টেনে না নিতাম
তোমরা আলো চিনতে কী করে?
তোমরা কেউ আমার কষ্ট
বুঝলে না , হয়তো আমিও
তোমাদের অনুভবের সাগর ছুঁতে
পারিনি।
অনুতাপহীন মানুষের দেশে
আমি দীর্ঘশ্বাস হয়ে বেঁচে আছি।

দুঃখবিলাসী

প্রতিদিন আমরা দেখি, মানুষের বদলে
যাওয়া ! দেখি কি বিচিত্র কারনেই
না সম্পর্ক বদলে যায়।প্রয়োজনে
অপ্রয়োজনে বদলায়। সকালে বদলায়,
বিকেলে বদলায়। আলোতে বদলায়,
আঁধারে বদলায়। বদলে যেতে কোন
কারন লাগেনা।বদলে যাওয়া মানুষের
সহজাত প্রবৃত্তি। প্রকৃতির গতানুগতিক
প্রক্রিয়ায় এমনিতেই বদলে যায়।
যারা দুঃখবিলাসী তারা মানুষের এই
বদলে যাওয়াকে মেনে নিতে পারে
না। আর তাই মন:কষ্ট কাছের মানুষটি
কেন এমন হঠাৎ বদলে গেলো, তা নিয়ে
শোকগাঁথা রচনা করেন।
মানুষ কি আসলেই হঠাৎ করেই বদলে
যায়? নাহ! হঠাৎ করে কিছু বদলায় না।
মানুষের এই বদলে যাওয়ার প্রক্রিয়া
অনেকদিন ধরেই চলতে থাকে। এত
ধীরে ধীরে চলতে থাকে যে, আমরা
বুঝতে পারিনা।
~
কখন, কিভাবে, মানুষ গুলো বদলাতে শুরু
করে , তা হয়তো সে নিজেই জানেনা।
পরিবর্তন আসে, কখনো সময়ের সাথে
নিজেকে খাপ খাওয়াতে । কখনো
পরিবেশ বাঁচাতে । কখনো বা
চাহিদার কারনে।
কারন যাই হোক, বদলে যাওয়া …
একজনের জন্য মঙ্গলকর হলেও, অন্যের
জন্য তা হয় ভীষন পীড়াদায়ক।
এক সময় যে মানুষটা দিন রাত গায়ে
গায়ে লেগে না থাকলে ভাল
লাগতোনা, এক মুহুর্ত কথা না শুনলে
মনে হতো শত বছর পিছিয়ে যাচ্ছে,
যার প্রতিটা চলন-বলন, সাবলীল
দৈনন্দিন জীবন-যাপন এক সময় প্রানে
দোলা দিয়ে যেত, হঠাৎ করেই যেন সে
মানুষটা খুব বিরক্তিকর হয়ে উঠে। কেন
যানি তার প্রতিটি নিঃশ্বাস দেহের
অনুতে অনুতে জ্বালা ধরিয়ে যায়! মনে
হয়, সহ্য হচ্ছে না আর! কিছুতেই যেন
নিজের সাথে মিলছেনা। কোথায় যেন
একটু ফাঁক থেকে যাচ্ছে। আর সেই
ফাঁকে সময়ে অসময়ে হু হু করে ঢুকে
যাচ্ছে বিষাক্ত বাতাস।
~
আমিও কখনো কখনো বদলে যাই। ভীষন
আঁধারের কোল ঘেঁসে উদীয়মান ওই
রাতের চাঁদ টুকু দেখে অকারনেই মনের
ভীতরটা বদলে যায়। বুকটা হু হু করে
উঠে। চোখ ফেটে যায় গভীর
অভিমানে।
জীবন এমনই । বড় রহস্যময়। সব রহস্যের
সমাধান পৃথিবী আজো করতে
পারেনি। পারবেও না হয়তো।।

অশ্রু

অশ্রু
,
,
বিবাহ!কাহার বিবাহ!সলিল তো
বলিয়াছিল এইরূপ বিবাহ সে করিবেনা
। তথাপি মুখে যে কিছু বলিবে তাহাও
নহে। আমি যে তাহাকে
ভালোবাসিয়াছি,বুঝাইয়াছিকিন্তু
সে সে বুঝিল কি-না তাহা বুঝিতে
দিল না।সেও ভালোবাসে জানি
,কিন্তু জানি কি-না সে সত্য জানিতে
চাহিল না।তথাপি বিচলিত হইয়া
পরিলাম।সারাবাড়ি খুঁজিয়া শেষ
অবধি দেখি,বাঁশবাগানের একটা
গাছে হেলান দিয়া কি যেন
ভাবিতেছে। আমি নিকটে
দাঁড়াইয়া,বিন্দুমাত্র ও ঠাহর পাইলনা।
সমুখে দাঁড়াইয়া দেখিলাম দুচোখের
কোল ঘেষিয়া অশ্রু ঝরিতেছে।
আর সকলের সঙ্গে আমিও ব্যস্ত হইয়া
পরিয়াছি লোকজন
খাওয়াইতে,বসাইতে।কিন্তু বুকের
ভিতরটায় কেমন যেন একটা অস্বস্তি
পীড়া দিতে লাগিল। একবার ,সলিলকে
একবার দেখিয়া লই। লাল শাড়ী আর
টিকলিতে তাহাকে কিরূপ
মানাইয়াছে।তাহার সৌন্দর্য আমি কি
দেখিলাম ! তাহা আমি প্রকাশ করিতে
পারিব না। ঘোমটা টানিয়া সলিল
এমন ভঙ্গিতে তাকাইয়া রহিয়াছে
প্রাণপণে তাহার দৃষ্টি এড়াইয়া দ্রুত
পালাইলাম।
বিবাহ সম্পন্ন হইয়া গিয়াছে । বর
দেখিতে বেশ । তবে তাহার সাথে
মানাইয়াছে কিনা তাহা বলিতে
গেলে এইটুকু বলিতে পারি তাহার
সঙ্গে মানাইতে পারে এমন কেহ পয়দা
হইয়াছে কিনা সন্দেহ।
বছর খানেক পরে সলিলকে একবার
দেখিয়া আসিবার জন্য মন কেমন
করিতে লাগিল । ছুঁতো খুজিতেছি এই
সময় আমার এক দূর সম্পর্কের চাচাতো
ভাইয়ের বিবাহ স্থীর হইয়া গিয়াছে ।
মুহূর্তে একরাশ পাগলা হাওয়া
খেলিয়া গেল হৃদয়ে । ইহারই মাঝে
কাহার কাছে জানিয়া শুনিয়াছি
,শান্ত সুবোধ ছেলেটি ভালো নয়। প্রভু
তাহাকে সুখী করো । এই প্রার্থণা
করিতে করিতে উদগ্রীব হইয়া রহিলাম
সেই দিনের অপেক্ষায় ।
নির্দিষ্ট দিনে যাত্রা শুরু করিলাম ।
বুকের ভেতরটায় কেমন এক
ছটফটানিতে ভুগিতেছি। তাহাকে
একবার দেখিব।সে কি খুশি হইবে
আমাকে দেখিয়া ? নাকি অস্বস্তিতে
পড়িবে।
বাজারে নামিয়াই শান্তর সহিত দেখা
,পথে বাক্য ব্যয় হইল সৌজন্যমূলক,
যাহা না হইলেই নয়। শান্ত চেঁচাইয়া
বলিল, " সলিল, - কে আসিয়াছে দেখ !!
গেটটা খোল।"আমি ভুত দেখিয়া যেন
থমকাইয়া গেলাম। সলিল মাথায়
আঁচলটা গাল অবধি টানিয়া সেই
হাসিটা ছড়াইয়া দিল। চেহারার এ কি
হাল হইয়াছে।তাহার দিকে
দ্বিতীয়বার চাহিতে ভেতরটায়
মুচড়াইয়া উঠিল।চোখ দুইটা ফোলা
লালচে ।মনে হয় অনেক্ষণ কাঁদিয়াছে।
হঠাৎ তাহার বাম পাশটা দৃষ্টিগোচর
হইলে সমস্ত হৃদপিন্ড হু হু করিয়া উঠিল।
শান্ত কি তাহাকে প্রহার করিয়াছে!
তাহার বাম গালে চারটা আঙুল বসিয়া
গিয়াছে।অবশেষে যখন বিদায়
লইয়াছি -কতবার ভাবিয়াছি তাহার
দিকে আর তাকাইবনা। কিন্তু
পারিলামনা।গোধূলীর কামিনীর ন্যায়
স্নেহময় তাহার হাসি আমাকে মাতাল
করিত তাহাই আজ হৃদয়কে ক্ষত বিক্ষত
করিতেছে। কলুষিত সমাজের কঠিন
শিকলে চৌদ্দবার লাথি কষিয়া
রক্তপাত ঘটাইয়াছি ।তথাপি শিকল
টলিল না।তাহার এইরূপ ঝরিয়া পড়া
সহিতে না পারিয়া দেশান্তর হইলাম।
খোলা মাঠে শুইয়া চাঁদ দেখিতেছি
ঐখানেও তাহার মুখ ভাসিতেছে,হাঁটুজ
লে নামিয়া মুখে জল ছিটাইতেছি
তাহারই ছায়া জলে কাঁপিতেছে,
আকাশে তাকাইয়া একমনে মেঘ
দেখিতেছি ঐখানেও তাহার মুখ স্পষ্ট
হইয়া উঠিতেছে। এই ভাবিয়া ভয়
হইতেছে-সত্যিই কি পাগল হইয়া
যাইতেছি!
ভাবিয়াছিলাম দেশে আর ফিরিবনা
কিন্তু ছাতীয়ানীর ভেজা মাটির গন্ধ
আমাকে কেবল টানিতে লাগিল
চুম্বকের ন্যায়।দেশে না ফিরিয়া
পারিলামনা। তাহারই দ্বারপ্রান্তে
পৌঁছিয়া থমকিয়া দাঁড়ইলাম।শুনিয়া
ছি ,তাহার অসুখ করিয়াছে কিন্তু কি
এমন অসুখ যে তাহাকে এ রকম বিনাশ
করিয়াছে। দ্রুত তাহার পাশে বসিয়া
পরিলাম। সলিল ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলায়
বলিল - "কিষাণ কোথায় ছিলে এতটা
দিন-------- ।শরীর যে একেবারে
ভাঙিয়া পড়িয়াছে ।"এই প্রথম তাহার
দৃষ্টি হইতে দৃষ্টি ফিরাইলামনা। সে
আবার বলিয়া উঠিল ,"কৃষান তোমাকে
একবার দেখিব বলিয়া এখনও
প্রাণপাত হইতেছে না।" আমি আরও
কাছে সরিয়া আসিয়া তাহার দুইটি
হাত কষিয়া ধরিলাম।এ হইতে পারেনা
সলিল - আমি তোমাকে নিঃশেষ হইতে
দিব না।আমার কথা সে শুনিতে পাইল
কিনা বুঝিলাম না। দেখিলাম, তাহার
চোখের কোন ঘেষিয়া কয়েক ফোটা
অশ্রু গড়াইয়া পড়িল!!
__গোধূলী স্বপ্ন (মম)

Thursday, December 01, 2016

“ভালবাসি”

ছেলেটা খুব সুন্দর করে গুছিয়ে
ভালবাসার কথাগুলো লিখে.
তারপর SEND বাটন না চেপে
BACKSPACE দিয়ে লেখাগুলো মুছে
দেয়…
তারপর,
কেমন আছ??
লিখে মেয়েটিকে SEND করে…
মেয়েটি ছেলেটির ম্যাসেজ এসেছে
দেখে খুব উৎসাহ নিয়ে ম্যাসেজটা
OPEN করে.
মনে মনে সে ভাবে,
এতদিন ধরে যে লেখাটি দেখার জন্য
সে ছটফট করতেছে আজ হয়ত ছেলেটি
সেই লিখাটি লিখে পাঠাবে…
কিন্তু ছেলেটির “কেমন আছ”
ম্যাসেজটা দেখে মেয়েটার
প্রতীক্ষার প্রহর বাড়তে থাকে…
ছেলেটি আসলে যা লিখতে চায়
আর মেয়েটি যা পড় তে চায়,
সেই কথাটা অসংখ্যবার BACKSPACE
এর চাপে মুছে যায়…
ছেলেটি জানে না এই মুহূর্তে তার
BACKSPACE এর চাপে মুছে যাওয়া
লেখাটি পড়ার জন্য ঐ প্রান্তে দুইটি
চোখ চাতক পাখির মত চেয়ে আছে…
আর মেয়েটিও জানে না,
“কেমন আছ” লিখাটি লিখার আগে
ছেলেটি অসংখ্যবার BACKSPACE
চেপেছে
আর তাই তার রিপ্লাই দিতে এত দেরি
হচ্ছে…
দুইজনের দুইটা মন একই সরলরেখায়
পাশাপাশি দুইটা পথে চলছে…
একটু সাহস,
শুধুমাত্র একটু সাহসের দরকার দুইটা
সরলরেখাকে এক করে দিতে…
তুমি যাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছ
হয়ত সেও গলা পর্যন্ত কথা নিয়ে বসে
আছে তোমাকে শুনাবে বলে…
একজন একটু সাহস করে লিখেই ফেল না
“ভালবাসি” কথা টা…
“এই কথাটা বলতে এত দেরি করলা
কেন বোকা??”-এমন একটা রিপ্লাই
অপর প্রান্ত থেকে আসতেও তো
পারে…